কয়েক দিনের টানা বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাট জেলার তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান নদীর পানি বেড়েছে। এতে করে নদী তীরবর্তী এবং চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকায় পানি প্রবেশ করে ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট ডুবে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় ৩ হাজার পরিবার ও ডুবে গেছে কয়েক হাজার একর ফসলি ক্ষেত।
২০শে জুন, বৃহস্পতিবার তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে সকাল ৬ টায়, ৯ টায়, দুপুর ১২ টায় এবং বিকেল ৩ টায় যথাক্রমে ১০, ১৫, ২০ এবং ২৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে একই সময়ে কাউনিয়া পয়েন্টে যথাক্রমে ১৭, ১৭, ২০ এবং ২৫ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
অপরদিকে ধরলা নদীর পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধরলার শিমূলবাড়ি পয়েন্টে বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টায়, ৯ টায়, দুপুর ১২ টায় এবং বিকেল ৩ টায় যথাক্রমে ৩৪, ২৭, ২৪ এবং ২৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া ধরলায় গত ৪৮ ঘন্টায় প্রায় ৮০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা গেছে, তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সানিয়াজান, ফকিরপাড়া, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈলমারী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর এবং গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে বন্যা দেখা দিয়েছে।
অপরদিকে ফসলি জমির ধানের বীজতলা, বাদাম, পাট, ভুট্টার ক্ষেত বন্যার পানিতে তলিয়ে পচন ধরায় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। পাশাপাশি তিস্তা ও সানিয়াজান অববাহিকার নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষজন ভাঙন আতঙ্কে পড়েছেন।
সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন বলেন, তিস্তার পানি বাড়ার সাথে সাথে চিনাতুলি, হরিণচড়া এলাকায় নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে স্থানীয়রা।দুইদিন ধরে পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছে কয়েক’শ পরিবার। এখনো সরকারি ভাবে ত্রাণ সহায়তা করা হয়নি পরিবারগুলোকে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলের দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কোনো সময় বিপদসীমা অতিক্রম করে নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্প মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির দেখা দিতে পারে।