রাজবাড়ী সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মারিয়া হক বলেছেন, প্রতিটি জেলের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় জাটকা আহরণ থেকে বিরত থাকতে হবে। জাটকা ধরা মানে ছোট ইলিশ বড় হওয়ার পথ রুদ্ধ করে দেওয়া। যারা জাটকা ধরছে, এ মাছ বড় হলেও তারাই ধরবে। বড় মাছ বিক্রি করে তারাই লাভবান হবে। দেশের মানুষ সুস্বাদু বড় ইলিশ খেতে পারবে।
গত রবিবার (১৬ই মার্চ) সকালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের অস্থায়ী কার্যালয়ে নিবন্ধিত ৭৪২জন জেলে পরিবারের মাঝে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ভিজিএফ (চাল) বিতরণ কার্যক্রমের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারিয়া হক।
এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারিয়া হক আরো বলেন, একটা মা ইলিশ ধরা মানে ছয় লাখ ডিম নষ্ট করা। কিছু অসাধু জেলেরা নিষিদ্ধ সময়ে মা ইলিশ ও জাটকা নিধন করে। জাটকা রক্ষা করতে পারলেই ইলিশের উৎপাদন বহুগুনে রক্ষা পাবে। একে রক্ষা করা এবং এর উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করা প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের অস্থায়ী কার্যালয়ে এ কার্যক্রমের আয়োজন করে সদর উপজেলা ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত ইউনিয়ন টাস্কফোর্স কমিটি।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো: জনি খানের সভাপতিত্বে এ কার্যক্রমের উদ্ধোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মারিয়া হক। উদ্ধোধনী দিনে ইউনিয়নের নিবন্ধিত ৭৪২টি জেলের পরিবারের মধ্যে ৩৬৬জন জেলের প্রত্যেকে ৮০কেজি চাল দেয়া হয়। বাকী আরো ৩৭৬জন জেলে পরিবারকেও ভিজিএফ’র চাল পরবর্তিতে প্রদান করা হবে বলে জানা গেছে।
এসময় ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শ্যামল কুমার বিশ্বাস, ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুহাম্মদ সিরাজুর রহমান, প্যানেল চেয়ারম্যান মো: প্লাবন আলী সহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নিবন্ধিত জেলে হিসেবে ভিজিএফ’র চাল পেয়ে খুশি হয়ে এক জেলে বলেন, আমরা নিজেরাও নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে পদ্মা নদীতে জাটকা আহরণ করবো না। অপর জেলেদেরকেও তা না করতে উৎসাহিত করবো। ইলিশ আমাদের দেশের সম্পদ। এখন আমরা জাটকা ধরা বন্ধ করলে আগামীতে বড় ইলিশ ধরার সুযোগ পাবো। এতে করে আমরাই বেশি দামে বাজারে ইলিশ মাছ বিক্রি করে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবো।
ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো: প্লাবন আলী বলেন, পদ্মা নদীর ভাঙন কবলিত সদর উপজেলা মিজানপুর ইউনিয়ন। আজকে ইউনিয়নের নিবন্ধিত ৭৪২টি জেলের পরিবারের মধ্যে ৩৬৬জন জেলের প্রত্যেকে ৮০কেজি চাল দেয়া হচ্ছে। আরো বাকী ৩৭৬জন জেলে পরিবারকেও পরবর্তিতে ভিজিএফ’র চাল প্রদান করা হবে। সরকারের নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে নিবন্ধিত জেলে ও মৌসুমী জেলেদের নদীতে জাল ফেলে জাটকা নিধন থেকে বিরত থাকার পরামর্শ প্রদান করা হয়।
মিজানপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো: জনি খান বলেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে নদীতে জাটকা ধরা বন্ধ থাকার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জেলে পরিবারকে ‘বিশেষ ভিজিএফ’ সহায়তা হিসেবে ৮০ কেজি চাল দেওয়া হচ্ছে। নিষিদ্ধ সময় জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সেই সাথে আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে জেলে সহ সকলের মাঝে গণ সচেতনা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে জাটকা নিধন, পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয় থেকে বিরত থাকতে হবে।