রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ শহীদ স্মৃতি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার(১৫ই আগষ্ট) সকাল ১০ টায় বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ঘন্টা ব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ছাত্রীরা ওই শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানায়।
অপর দিকে মানববন্ধনে অভিযুক্ত শিক্ষক আসলামুজ্জামান আসলামকে শারিরীক ভাবে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের ৩জন খন্ডকালীন পুরুষ শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত শিক্ষককে পেটানোয় নেতৃত্ব দেয়া খন্ডকালীন তিনজন শিক্ষক হলেন মৃত্যুঞ্জয়, দুলাল ও সেলিম রেজা সহ পরিচয়ধারী কয়েকজন যুবক যুক্ত ছিলো।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্রের নিকট পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা।
এক পক্ষের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কিছু শিক্ষার্থী স্কুলের সামনে রাস্তায় মানববন্ধন কর্মসূচির সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তারা স্কুলের লাইব্রেরিতে ঢুতে ভাংচুর শুরু করে এবং শিক্ষক আসলামকে গণপিটুনি দেয়া শুরু করে। অন্য শিক্ষকরা তাকে রক্ষা করতে গেলে তাদেরকেও লাঞ্চিত করা হয়।
অপর পক্ষের অভিযোগ পত্রে ছাত্রীরা জানায়, তাদের যে শিক্ষকের উপর যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে তার আইনগত সুষ্ঠু বিচার চাই এবং আমাদের বাবা সমতুল্য শিক্ষকদের নির্মমভাবে আঘাত করেছে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর শাস্তির দাবি করছি।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি প্রানবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহত শিক্ষক আসলামকে তাদের হেফাজতে নেয়। পরে তাকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের জিম্মায় দিয়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ আসলাম বলেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। বিদ্যালয়ের তিনজন খন্ডকালীন শিক্ষক ছাত্রীদের এক প্রকার জিম্মি করে একচেটিয়া প্রাইভেট পড়ায়। কেউ না পড়লে তাকে পরীক্ষায় ফেল করানো সহ নানা ধরনের ভয় দেখায়। বিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষকদের সাথেও ভালো আচরন করে না। আমি বিভিন্ন সময় তাদের প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে বহিরাগত মাস্তানদের দিয়ে ভয় দেখায় এবং দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।
বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক উদ্ধব সাহা জানান, আমরা আজকের ঘটনাসহ অভিযুক্ত শিক্ষক আসলামউজ্জামানের বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অবগত করেছি। তিনি অভিযুক্ত শিক্ষক আসলামকে ৭ দিনের ছুটিতে পাঠিয়ে দেয়া সহ তাকে দ্রুত বদলির কথা জানিয়েছেন। সেই সাথে খন্ডকালীন শিক্ষকদেরকেও বাদ দিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, স্কুলে শৃঙ্খলা ফেরাতে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ইতি মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। খন্ডকালীন শিক্ষকদেরও বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।