রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নে গৃহবধু তামান্না আক্তার (২৮) হত্যার অভিযোগে পুলিশ সদস্য স্বামী সহ জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ই এপ্রিল) রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের চন্দনী বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় ঘন্টা ব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করে নিহত তামান্নার আক্তার পরিবার, এলাকাবাসী ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধন শেষে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া মহাসড়ক প্রায় আধা ঘন্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সৃষ্ট যানজটে ভোগান্তির শিকার হয় যানবাহন চালক ও সাধারণ যাত্রীরা।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে নিহত তামান্না আক্তারের মা সুরাইয়া আক্তার, পিতা তারেক আহম্মেদ, চন্দনী ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব মতিউর রহমান মুন্না, চন্দনী বাজার ব্যবসায়ী মো: শুকুর আলী এলাকাবাসী এ মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত প্রকৃত হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান তারা।
বিক্ষোভে বক্তারা বলেন, ৯ বছর পূর্বে রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের আহম্মদ আলীর ছেলে সাথে বিবাহ দেওয়া হয় তামান্না আক্তারের। লিটন মাহমুদ একজন পুলিশ সদস্য। তিনি ঢাকার শাহবাগ থানায় চাকুরী করেন। পুলিশ সদস্য লিটন মাহমুদ ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা তামান্নার নিকট যৌতুক দাবিতে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করতেন।
গত ৩ এপ্রিল দিবাগত রাত ১১ টার দিকে পুলিশ সদস্য লিটনের নিজ বাড়িতে গৃববধূ তামান্নাকে ব্যাপক নির্যাতন করেন। অসুস্থ্য অবস্থায় স্থানীয়রা গৃহবধূর পিতা-মাতাকে নির্যাতনের বিষয়টি অবগত করেন। বাবা-মা দ্রুত তামান্নাকে শ্বশুড় বাড়ী থেকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে তামান্নাকে নির্যাতন করেন পুলিশ সদস্য লিটন মাহমুদ। এরপর গত ৫ এপ্রিল গৃহবধু তামান্না আক্তারের মৃত্যু হয়।
নিহত তামান্নার পিতা তারেক আহম্মেদ বলেন, যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে রাজবাড়ীর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করি। বিজ্ঞ আদালতের বিচারক রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মাহমুদুর রহমানকে অভিযোগটি আমলে নিয়ে এফআরআই করার আদেশ দেন।
এব্যাপারে রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেন, বিজ্ঞ আদালতের আদেশে আমরা বুধবার দিবাগত রাত ১২টার সময় তারেক আহম্মেদের অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা দায়ের করি। মামলাটি তদন্ত চলছে, আসামী যত প্রভাবশালী হোক তাকে গ্রেফতার করা হবে।